Skip to main content

নির্জনতার টানে নেতারহাট - Netarhat Tour - Roadtrip

নির্জনতার টানে নেতারহাট 

আমার নতুন ব্লগে সকল কে স্বাগত জানাই। এই ব্লগ টি আমার প্রথম ব্লগ লেখার প্রচেষ্টা। আশা করি কিছু ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে ব্যাপারটাকে দেখবেন এবং কোনো পরিমার্জন প্রস্তাব থাকলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।


হটাৎ একদিন সান্ধ্য আড্ডায় ঠিক হল সপ্তাহান্তে কাছাকাছি কোথাও বেরিয়ে এলে মন্দ হয় না। কাছাকাছি যাওয়ার মতো জায়গা কলকাতার আশেপাশে কোথায় আছে সে নিয়ে বিশেষ আলোচনা চললো । কেউ একজন বলে উঠলো নেতারহাটে যাওয়া যেতে পারে,বাকি সবাই বেশ আগ্রহ ও প্রকাশ করল। কিভাবে যাওয়া যেতে পারে দুদিন বেড়ানোর জন্য ঠিক জায়গা হবে কিনা। শেষমেশ ঠিক হলো এবার আমরা বাইক এ যাবো , দূরত্ব ও বেশী নয় মাত্র ৫৫0 কিলোমিটার, একদিনেই পৌঁছে যাওয়া যাবে। একদিন দু-রাত থেকে পরের দিন আবার কলকাতা ফেরত আসা যাবে। গুগলে সার্চ করে রাস্তার একটা ধারণা করে নিলাম কলকাতা থেকে কোলাঘাট হয়ে মেদিনীপুর ধরে সোজা জঙ্গলমহল, ওখান থেকে ঘাটশিলা হয়ে জামসেদপুর তারপর দলমা হয়ে সোজা রাঁচি বাইপাস, ওখান থেকে লোহারদাগা হয়ে একদম নেতারহাটে। অনলাইনে হোটেল ও বুক করে ফেলা হলো ।

Netarhat Tour  Travel Blog _ Secreative Forest


ঝাড়খণ্ড ট্যুরিজম এর ওয়েবসাইটে গিয়ে খুব সহজেই খুঁজে পেলাম হোটেল প্রভাত বিহার, রেটিং ও খুব ভালো দেখলাম আর খরচ ও আমাদের একদম বাজেটের মধ্যে। ৬ জনের জন্য দুটো রুম এর ভাড়া ৭২০০ ট্যাক্স সহ । আমাদের দুটো এক্স্ট্রা বেড নিতে হয়েছিল যেটা বেড প্রতি ৩০০ টাকা মতো এক্স্ট্রা চার্জ করেছিল।
Netarhat Tour Travel Blog _ Secreative Tourism

এবারে ব্যাগ গোছানোর পালা। বাইক যেহেতু বাহন খুব জরুরী জিনিস পত্তর ই নেয়া হলো। তিনটে বাইক ছয় জন আরোহী।শনিবার ভোর ৪ টে নাগাদ কলকাতা থেকে বেরিয়ে পড়লাম নেতারহাট এর দিকে । হাইওয়েতে বড়ো বড়ো ট্রাক গুলো কে পাস কাটিয়ে ঠাণ্ডা হাওয়া খেতে খেতে এগিয়ে চললাম। কোলাঘাট এসে প্রথম থামা হলো , হাইওয়ের ধারের ধাবা গুলো বেশ ভালো চা বানায়। শের ই পাঞ্জাব তো খুব বিখ্যাত ধাবা। চা পান করে আবার এগিয়ে চললাম হাইওয়ে ধরে।

Netarhat Tour Travel Blog _ Secreative Forest

সকালের আবছা আলো আর লম্বা হাইওয়ে চারপাশে শুধু সাঁ সাঁ গাড়ির আওয়াজ ।চারপাশে হালকা কুয়াশার চাদর এ মোড়া , আকাশ ফুটে লাল সূর্য আস্তে আস্তে উকি মারছে অসাধারণ অনুভূতি। যতটা সময় আমরা ভেবেছিলাম তার থেকে অনেকটা বেশি সময় লাগছিলো। জঙ্গলমহলে ঢুকলাম প্রায়  সকাল ৯.৩০ এর দিকে। উঁচু নিচু ঢেউ খেলানো রাস্তা দুপাশে সবুজ বনানী কেটে এগিয়ে চলেছে। কিছু জায়গায় রাস্তা বাড়ানোর কাজ চলছে দেখলাম। আমরা বেশ খানিকক্ষণ একটু জিরিয়ে নিলাম গাছের ছায়া আর মৃদু শীতল বাতাসে। চার পাশে মহুয়ার গন্ধ মাতাল করা এক পরিবেশ। সন্ধ্যের একটু পর পর রামপুর পৌঁছে গেলাম। তারপর রাস্তা একদম ফাঁকা । ভেবে ছিলাম রাত ১১ টার দিকে হোটেল এ পৌঁছে যাবো। লোহারদাগা পৌঁছলাম প্রায় রাত ১.৩০। এর পর শুরু হলো পাহাড়ি পথ। দু একটা শিয়াল ছাড়া কেউ কোথাও নেই। হোটেল এ পৌঁছলাম রাত ২.৩0। ফোন করে বলাই ছিল তো ঢুকতে অসুবিধা হয়নি। সবাই বেশ ক্লান্ত ছিলাম ঘুম এ চোখ বুজে আসছিল।
Netarhat Tour Travel Blog _ Secreative Hotel


পরদিন উঠতে একটু বেলাই হয়ে গেলো। ব্রেকফাস্ট সেরে বেরিযে পড়লাম আসে পাশের পরিবেশ দেখতে। আমাদের হোটেল টা পাহাড়ের একদম ঢালে।
Netarhat Tour Travel Blog _ Secreative Hotel

বেশ কয়েক ধাপ উঠে তবে রাস্তায় উঠতে হয় । হোটেল থেকে বেড়িয়ে সামনে একটা পুলিশ ক্যাম্প । আইজিআই গেমে র মতো একটা উঁচু টাওয়ার ও রয়েছে। পিছনে বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে অনেক গরু চড়ে বেড়াচ্ছে। লোকজন খুব একটা নেই। পাখির আওয়াজ শুনতে শুনতে বেশ খানিকটা পথ নীচে নেমে আবার উপরে উঠে বাঁক ঘুরেই নেতারহাট বাসস্ট্যান্ড। আমরা বাসস্ট্যান্ড ছাড়িয়ে পাহাড়ি পথ বেয়ে অনেকটা এগিয়ে একটা টিলা র উপর উঠে বসলাম চার পাশের মাটি শুকনো পাতার আস্তরনে ঢেকে আছে । লম্বা গাছ গুলোর ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো পড়ে জায়গাটা অসম্ভব সুন্দর করে দিয়েছিল। উঠতে ইচ্ছে করছিল না। হোটেল থেকে ফোন করে খাবার খেতে না ডাকলে আরো বেশ খানিকটা সময় থাকতাম আমরা।
Netarhat Tour Travel Blog _ Secreative Forest

হোটেলের সামনের খাবার জায়গাতে বসে চারপাশের পাহাড় দেখতে দেখতে খাওয়া আর বিকেল এ কোথায় যাবো সেটা নিয়েও ভেবে নেয়া হলো। এবার যাবো সানসেট পয়েন্ট এ।
Netarhat Tour Travel Blog _ Secreative Forest

খেয়ে উঠে একটু জিরিয়ে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম সানসেট পয়েন্ট এর দিকে। কিছুটা বনের পথ পেরিয়ে খোলা মাঠের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চললাম আসে পাশে কিছু কিছু চা বাগান চোখে পড়লো । আমাদের দার্জিলিংয়ের চা গাছের মতো বেঁটে নয় একটু লম্বা। সামনে বেশ ভিড় পাশে এক বিশাল জলাভূমি, ভিড়ের কারণ এ আমরা আর দাঁড়ালাম না। দেখে লাগলো কোনো কিছুর শুটিং চলছে, নয়তো জায়গাটা বেশ সুন্দর ছিল।
Netarhat Tour Travel Blog _ Secreative Sunset
Add caption

সানসেট পয়েন্ট এ পৌঁছে দেখলাম সামনে পাহাড়ের সারি র নীচে গভীর বন। পালামো টাইগার রিজার্ভ এর বোর্ড ঝোলানো রয়েছে কয়েক জায়গায়।
Netarhat Tour Travel Blog _ Secreative Sunrise

Netarhat Tour Travel Blog _ Secreative Forest


Netarhat Tour Travel Blog _ Secreative Flower

আমরা বেশ খানিকটা এগিয়ে একটা জায়গায় গিয়ে বসলাম সামনে ছবির মতো একটা একটা পাহাড় গায়ে লেগে লেগে দাঁড়িয়ে আছে। আস্তে আস্তে সারা আকাশ লাল হয়ে এলো, এই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। সূর্য এবার অস্ত যাবে।




নিস্তব্ধ পরিবেশ চার পাশে শুধু পাখির আওয়াজ। আমরা নির্বাক হয়ে দৃশ্য টা উপভোগ করতে করতে একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেছিলাম । ঝুপ করে সন্ধ্যা নেমে আসলো বুঝতেই পারিনি। এবার হোটেল এ ফেরার পালা ।
Netarhat Tour Travel Blog _ Secreative Roadtrip

নির্জনতার টানে নেতারহাট  -Netarhat Tour - Roadtrip

Comments

Popular posts from this blog

Most Promising, Rising Female Teen Artist of 2019 - artsyypics

Most Promising, Rising Female Teen Artist of 2019 There's no denying that many new artists are rising today, but the more interesting part is that a lot of them are very young. Amazingly, this young artist (Artsyypics) already proving just how much talent She can share with the world. Profile :   Artsyypics   Real Name :   Toby From :   CA Instagram : Click Here She started her drawing career by posting artwork on Instagram . She is a Self-taught artist, has loved art since a really young age and continues to create art in various media. Hopes to improve skills even more in the future!  In a few months, she started to draw beautiful landscapes and portraits. Can you believe she's only 18 years old ?  You know I can't. But with her beautiful and unique drawings and color combination, She is set to be one of the brightest stars of her generation. She continues to wow us everyday with her style...
চিঠি ............শ্রী কবিগুরু , এটা তোমাকে লেখা চিঠি দেখতে চাই তোমাকে বলতে চাই অনেক কথা তোমাকে ভালোবাসতে চাই তোমার মতো করে তোমায় ভালোবেসে হতে চাই কখনো মৃণালিণী, কখনো কাদম্বরী, কখনো বা কৃষ্ণকলি, কখনো নিন্দে করতে চাই তোমার লেখার,কখনো বা তোমার লেখার প্রশংসায় হতে চাই গুণমুগ্ধ । তোমাকে ভালোবেসে কাটাতে চাই তোমার সাথে জীবন । মৃতুন্জয় হতে কতোটা কষ্ট হয়েছিলো তোমার খুব জানতে ইচ্ছে করে, হাতে হাত রেখে পাশে থাকতে ইচ্ছে করে । জানো,তোমার মতো এতো কষ্ট এই জীবনে পাইনি.. তবুও মৃতুন্জয় হতে পারিনি এখনো.. ছাড়ো সেসব কথা ক্যামেলিয়া সত্যি ছিলো কেও? বা সেই কৃষ্ণকলি? কারোর সাথে হয়েছিলো তোমার সেই হঠাত্ দেখা? কাদম্বরীকে আমার খুব হিংসা হয়,জানো ? যদি কখনো ফিরে আসো, হঠাত্ দেখা হবে তো আমার সাথে ? বা ক্যামেলিয়া হয়ে , কোনো এক পাহাড়ের পথে ?

Watercolor by Joseph Zbukvic

Watercolor by Joseph Zbukvic Joseph Zbukvic (born in Zagreb, Croatia) is a leading master of the watercolor medium of his time. His impressive achievements and enormous success is due to his ability to transform any subject into visual poetic language. Covering an infinite variety of subjects, his sensitive, lyrical and atmospheric paintings have captured people and galleries from all around the world. Due to his exceptional drawing skills and extraordinary abilities in art, he is proficient in any medium. However, it is his passion for watercolor that has led him to become a unique master of that medium. Although greatly admired for his soft moody impressions of rural life, Joseph also produces strong urban scenes and powerful equestrian images. He has always had a deep connection and affection for the laborer and the common man and it is these works that are also his finest paintings ever produced in watercolor. The artist now lives in Melbourne, Australia. ...